অন্যান্যশিরোনাম

ঘুম প্রিয় এক এসআই

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  চাকরি করতেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে। কিন্তু চাকরির সুবাদে রাতবেরাতে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করার জন্য ঠিক মতো ঘুমাতে পারতেন না তিনি। তাই শান্তিতে ঘুমানোর জন্য ছেড়ে দেন চাকরি। এমনই এক ঘটনা ঘটালেন  রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ ইউনিয়নের বাসিন্দা সুনীল কুমার দে

জানা গেছে, সুনীল কুমার দে ১৯৯৬ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে সিপাহি পদে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু এ চাকরিতে থাকার সময় ঠিকমতো ঘুম হতো না তার। পরে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে পদোন্নতি পেলে কাজের চাপ আরও বেড়ে যায়। কাজ শেষে অনেক সময় ঘুমাতে ঘুমাতে ভোর হয়ে যেত। ভোরে ঘুমিয়ে আবার ঘুম ভাঙতে গড়িয়ে যেত দুপুর। সেই থেকে তার অভ্যাস হয়ে যায় দুপুর পর্যন্ত ঘুমানোর। কিন্তু তার শান্তির ঘুমে বাগড়া দিত চাকরি। সময়ে-অসময়ে ডাক পড়তো ডিউটিতে যাওয়ার। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন চাকরি ছেড়ে দেওয়ার।অবশেষে ২০২১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন সুনীল কুমার। চাকরি শেষে বাড়ির পাশে বানীবহ বাজারে ওষুধের দোকান দেন। এখন আর তার শান্তির ঘুমে বাগড়া দেয় না কেউই। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে এরপর দোকান খোলেন তিনি।

সুনীল কুমার দে বলেন, আমি ঘুম প্রেমি মানুষ। ঠিকঠাক মতো ঘুম না হলে মাথা ঠিক থাকতো না। চাকরিতে থাকাকালীন আমি শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম না। ২০২৬ সাল পর্যন্ত আমার চাকরির মেয়াদ ছিল। কিন্তু এই ঘুমের কারণে চাকরিটা আর করতে পারলাম না। এখন আর ডিউটির কোনো চাপ নেই। যখন ইচ্ছে স্বাধীনভাবে ঘুমাতে পারি।

সুনীল কুমারের স্ত্রী তাপসী দাস বলেন, আমার স্বামী সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারেন না। দুপুর ১২টার আগে তার ঘুম ভাঙে না। যে কারণে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে চলে এসেছেন। বর্তমানে অবস্থা এমন হয়েছে যে, দুপুর ১২টা পর্যন্ত না ঘুমালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।

সুনীল কুমারের প্রতিবেশী অভয় সরকার বলেন, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটার কারণে সুনীলদা চাকরি ছেড়ে এসেছেন। বর্তমানে তিনি ওষুধের দোকান করছেন। আমরা সকাল ১০টায় দোকান খুললেও তিনি দোকান খোলেন দুপুর ১টায়। তবে অনেক রাত পর্যন্ত দোকান খোলা রাখেন তিনি। তার মতো বিনয়ী মানুষ খুব কমই আছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button