অর্থনীতিশিরোনাম

ঘুরে দাঁড়াতে দ্রুত পুনর্বাসন চান ক্ষতিগ্রস্তরা

 আদৃতা ইসলামঃ রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটজুড়ে এখন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের শুধুই হাহাকার। চারিদিকে পোড়া গন্ধ। অগ্নিকাণ্ডের ৩ দিন পার হলেও ধ্বংস্তূপের কোনো কোনো জায়গা থেকে এখনও ধোঁয়া উঠছে। ধ্বংস্তূপের নিচে এখনও কিছু অক্ষত আছে কি না তা খুঁজে দেখছেন ব্যবসায়ীদের অনেকে। তাদের এখন একটাই চিন্তা, কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে ন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, ‘নতুন ভবন তৈরি করতে অনেক সময় লেগে যাবে। তাই আগে আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক, পরে নতুন ভবনের ব্যবস্থা করুক।’

পুড়ে যাওয়া  কৃষি মার্কেট শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, মার্কেটের অনেক দোকানের কলাপসিবল গেট, দোকানের শাটার অক্ষত থাকলেও ভেতরে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দোকানের ওপরে টিন থাকার কারণে আগুনের শিখা ওপর দিকেই বেশি ছড়িয়েছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা। এক লাইনে পাশাপাশি থাকা ৮-১০টি স্বর্ণের দোকানেও একই চিত্র দেখা যায়। বাইরে কলাপসিবল গেট লাগানো অবস্থায় থাকলেও ভেতরে পুরোটাই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ক্রোকারিজের দোকানগুলোর কাচের সব জিনিস ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে মাটির সঙ্গে, ছাইয়ের সঙ্গে মিশে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি দোকানের ছাই সরিয়ে সেখান থেকে মালামাল নিয়ে যেতে দেখা গেছে নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোরদের। বস্তায় ভরে লোহার অ্যাঙ্গেল, তার, পাইপ নিয়ে যাচ্ছিল কেউ কেউ।

মার্কেটটিতে খুচরা ও পাইকারি চালের বাজার ছিল পাশাপাশি। আগুন থেকে পাইকারি বাজার কিছুটা রক্ষা পেলেও পুড়ে নিঃশেষ হয়ে গেছে খুচরা বাজারের ছোট-বড় সব দোকান। কয়েকটি দোকানের ছাইয়ের স্তূপ থেকে শনিবারও ধোঁয়া বের হচ্ছিল।  পুড়ে যাওয়া একটি স্বর্নের   দোকানের মালিক মারুফ হোসেন বলেন ঋন নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছিলাম   এখন ‘সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।  দোকানে৮- ১০ লাখ টাকার মাল ছিল। সব পুড়ে গেছে। কিছুই অক্ষত নেই।’ আগুনে শুধু দোকান নয়, ব্যবসায়ী ও তাদের পরিবারের স্বপ্নও পুড়ে গেছে।কথা হয় নিরব রানার সাথে  ,রানা ক্লথ স্টোর নামে তার একটি কাপড়ের দোকান ছিল সেটিও আগুনে পড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এরপর এগিয়ে এলেন আরও একজন জানালেন তার কসমেটিক্সের দোকান ছিল, সেটিও ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে,   তবে তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে চান।ক্ষতিগ্রস্ত এক ব্যবসায়ী র- নিউজকে  বলেন, ‘সিটি করপোরেশন বহুতল ভবন করে দেবে এমনটি শুনেছি। কিন্তু সেটা হতে তো আরও ২-৩ বছর লাগবে। এ সময় আমরা ব্যবসায়ীরা কী করব? নতুন ভবন নয়, আমরা আগে পুনর্বাসন চাই। এখানে আবার দোকান নিয়ে বসতে চাই। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা চাই। যত দ্রুত সম্ভব ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করে এখানে চৌকি বসিয়ে হলেও আমরা কেনাবেচা শুরু করতে চাই। প্রয়োজনে নিজেরাই পরিষ্কার করে নেব।’

দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার সলিমুল্লাহ সলু  র- নিউজকে  বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা চান আবার মার্কেট হোক, দোকান হোক। কিন্তু তারা কেনাবেচা বন্ধ করতে চান না। মার্কেট কাঠামো তৈরি করতে গেলে সময় লাগবে। তত দিন ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বন্ধ রাখতে চাইছেন না। সে ক্ষেত্রে রাস্তার একটি পাশ বন্ধ রেখে অস্থায়ীভাবে দোকান বসাতে দিতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা সবার সঙ্গে কথা বলছি।’

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে গত বুধবার রাত সাড়ে ৩টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর বিশেষ দল। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button