নিজস্ব প্রতিবেদকঃদেশে একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৭৫৭ রোগী; এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ১০ জনের। তাতে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৬১ হাজার ৪৭৩ জনে। তাদের মধ্যে ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এডিস মশাবাহিত এ রোগে।
ডেঙ্গুতে এক বছরে এত মৃত্যু আর কখনও দেখেনি বাংলাদেশ। এর আগে ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে এক বছরে সর্বাধিক ২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এ বছরের মৃত্যু সংখ্যা বৃহস্পতিবার সেই রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়।
২০১৯ সালে সারাদেশে রেকর্ড ১ লাখ ১ হাজারের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। ২০২২ সালে মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এ বছর সাত মাসেই সেই সংখ্যা প্রায় ছুঁয়ে ফেলেছে।গত একদিনে যত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৮৯২ জনই ঢাকার। বাকি ৮৬৫ জন ঢাকার বাইরের। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় ১৪টি হাসপাতাল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি এবং মৃত্যুর তথ্য দেয়নি। অনেক জেলা থেকেও শুক্রবার তথ্য আসেনি। ফলে শুক্রবারের যে প্রতিবেদন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দিয়েছে, তাতে দিনের সব তথ্য আসেনি। বরাবরের মতই শুক্রবারের বাকি তথ্য শনিবারের প্রতিবেদনে সন্নিবেশ করা হবে। তাতে এক দিনে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তি দেখা যাবে।স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ হাজার ০২৬ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৪ হাজার ৫৬৮ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪ হাজার ৪৫৮ জন।এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছিল বর্ষা মৌসুমের আগেই। ভরা বর্ষায় জুলাই মাসে তা ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। জুলাই মাসের ৩১ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন রোগী, মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। এক মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই সংখ্যা এ বছরের মোট সংখ্যার তিন চতুর্থাংশ। আর আগস্টের প্রথম তিন দিনে ৯ হাজার ৬৪১ জন রোগী ভর্তি হয় হাসপাতালে। মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের।এছাড়া জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন এবং জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন এবং মে মাসে দুজন এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়।এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।