শিক্ষাশিরোনাম

৫ মিনিটের জন্য স্বপ্ন শেষ ! এর দায় কে নেবে?

দারোয়ান আমার স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক  :  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য পাবনা থেকে ঢাকায় এসেছিলেন শাহারিয়ার খাঁন। তীব্র যানজটের কারণে পরীক্ষাকেন্দ্র ইডেন মহিলা কলেজে পৌঁছাতে ৫ মিনিট দেরি হয় তার। দেরি হওয়ায় তাকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, বরং ধাক্কা দিয়ে কলেজের গেট থেকে বের করে দেন দারোয়ান।

শনিবার (১৭ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি পরীক্ষা সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ইডেন কলেজের দুই নম্বর গেটে দেখা যায়, ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের গাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু, পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের বাধা দেন এবং উপাচার্যকে নিরাপদে বের হতে সহযোগিতা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজে ভর্তিচ্ছু শাহারিয়ার খাঁন  বলেন, আমি যে কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েছি, সবগুলোতে অপেক্ষমান তালিকায় আছি। বড় আশা নিয়ে পাবনা থেকে এসেছি—সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে ঢাকা কলেজে ভর্তি হবো। প্রথমে দারোয়ান আমাদের এক গেট থেকে অন্য গেটে যেতে বলেন। এভাবে আমাদের সময় সময় নষ্ট করেন তারা। একপর্যায়ে তারা আমাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। এর দায় কে নেবে? অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ থেকে ২০ মিনিট দেরি হলেও পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে দিয়েছে। ইডেন কলেজ কেন্দ্র কেন এমন করল, বলতে পারি না। তারা আমার স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে।

সাত কলেজে ভর্তিচ্ছু আরেক শিক্ষার্থী মো. রাফিউল ইসলাম বলেন, আমি গাইবান্ধা থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছি। রাস্তায় জ্যাম থাকায় আমরা সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে আসতে পারিনি। ইডেন কলেজের দারোয়ান আমাদের ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছেন। তাদের মতো এত জঘন্য ব্যবহার আমি কোথাও দেখিনি। তারা আমাদের স্বপ্ন নষ্ট করে দিয়েছেন।

ময়মনসিংহ থেকে আসা সানজিদা আক্তার  বলেন, আজকে আমি পরীক্ষা দিতে পারিনি একমাত্র ইডেন কলেজের দারোয়ানের জন্য। তারা প্রথমে এক গেট থেকে অন্য গেটে যেতে বলেছেন। কিন্তু, কোনো গেট দিয়েই আমাদের প্রবেশ করতে দেননি। অনেকে কান্না করতে করতে ফিরে গেছেন। একজন পরীক্ষার্থীর জীবন নষ্ট করার অধিকার তাদের নেই।

পরীক্ষার্থী মুক্তা জাহানের অভিভাবক আছমা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে নিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে এসছি। মাত্র ২ মিনিটের জন্য আমার মেয়েকে পরীক্ষার হলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এই কলেজের দারোয়ানের ব্যবহার অনেক খারাপ। তারা পরীক্ষার্থীদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছেন। নিজের চোখে দেখলাম, একজন অভিভাবকের স্বপ্ন কিভাবে শেষ হয় যায়।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন,পরীক্ষায় কিছু নিয়মনীতি, শৃঙ্খলা অনুসরণ করতে হয়। একটি পরামর্শ দেওয়া থাকে যে, পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে উপস্থিত থাকতে হয়। ভর্তি পরীক্ষায় স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতার জন্য কিছু নিময় মেনে চলতে হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button