নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দিল্লির কাছে সাতটি নিত্যপণ্যের আমদানিতে বছরে ৬১ লাখ ৭০ হাজার টনের কোটা চেয়েছে ঢাকা। চাল, আটা, চিনি, মসুর ডাল, রসুন, আদা ও পেঁয়াজের মতো এসব নিত্যপণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধা প্রদানে ভারতকে অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ। ভারতও এতে সম্মত হয়েছে। তবে দেশটি নির্ধারিত কোটার পুরো পণ্য আমদানির নিশ্চয়তা চেয়েছে। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের পরই কোটা সুবিধায় ভারত থেকে পণ্য আসতে পারে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
জানা গেছে, চলমান বৈশ্বিক সংকট সামনে রেখে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে ভোগ্যপণ্য আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভারতকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কারণ ভারত থেকে আমদানি সহজ ও নিরাপদ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দিল্লির অনুরোধে গত ফেব্রুয়ারিতে চাহিদা পণ্যের তালিকা পাঠায় ঢাকা। ভারতের আপত্তিতে সেখান থেকে মসুর ডাল বাদ দিয়ে পুনরায় তালিকা পাঠালে বিষয়টি ঝুলে যায়। কিন্তু ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্যোগে বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। শুধু তা-ই নয়, নতুন প্রস্তাবে মসুর ডালও যুক্ত হয়েছে। একই সঙ্গে কিছু পণ্যের চাহিদাও বেড়েছে।সূত্র জানিয়েছে, কোটায় বাংলাদেশের চাহিদামতো সবগুলো পণ্যই সরবরাহে দেশটি সম্মত হয়েছে। কিন্তু দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটায় যে পরিমাণ পণ্য নির্ধারিত হবে তার পুরোটা বাংলাদেশকে নিতে হবে। অন্যথায় ভারতের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এ ছাড়া এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ভারত নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিতে চায়।
কোটার অর্থ হচ্ছে, ভারত থেকে বাংলাদেশ স্বাভাবিক আমদানি করবে। তবে কোনো কারণে ভারত এসব পণ্যের রপ্তানি নিষিদ্ধ বা স্থগিত করলেও বাংলাদেশ এই পণ্য ভারত থেকে পাবে। এসব পণ্য আমদানিতে বিশেষ করে পেঁয়াজ, রসুন, আদার ক্ষেত্রে সময় বেঁধে দিতে চাইছে ভারত। কারণ পচনশীল এসব পণ্য সংরক্ষণ করা যেমন কঠিন, তেমনি ব্যয়বহুল। ফলে নির্ধারিত সময়েই তা আমদানির নিশ্চয়তা চায় দেশটি।অন্যদিকে বাংলাদেশ প্রস্তাব করেছে, বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে এসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি বিশেষ পরিস্থিতির কারণে ভারত যদি বাড়তি শুল্ক আরোপ করে, তা হলে কোটায় আমদানি করা পণ্যে বাড়তি শুল্ক নেওয়া যাবে না। এর জবাবে বিধির বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছে ভারত।
কোটায় পণ্যের পরিমাণ : নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতিবছর ভারত থেকে সাড়ে ১৫ লাখ টন চাল, গম ২৬ লাখ টন, যা আগে ছিল ২৫ লাখ টন; চিনি ১০ লাখ টন, মসুর ডাল ১ লাখ টন; পেঁয়াজ ৮ লাখ টন, যা আগে ছিল ৬ লাখ টন; আদা ১ লাখ টন থেকে কমিয়ে ৫০ হাজার টন, রসুন ৫০ হাজার টনের পরিবর্তে ৭০ হাজার টন। এর মধ্যে ৫ থেকে ৮ লাখ টন চাল, ৫ থেকে ৭ লাখ টন গম, ১ লাখ টন মসুর ডাল এবং ২০ হাজার টন পেঁয়াজ সরকারিভাবে আমদানি করা হবে। বাকিগুলো বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীরা আমদানি করবেন।