Uncategorized

বহু বিবাহের জননী সারমিনের প্রতারনায় নিঃস্ব অনেক যুবক

বাগেরহাট থেকে রুহুল আমিন বাবুঃ বহু বিবাহের জননী। এক বিয়েতে ক্ষান্ত নয়। বিয়ের নেশায় উদগ্রেব হয়ে থাকে সবসময়। তার কাছে বিবাহিত-অবিবাহিত কোন বিষয় নয়। যুবকদের টাকা থাকলেই নাম মাত্র বিয়ে করেই যে কোন মূল্যে প্রতারনার ফাঁদে ফেলে সবকিছু হাতিয়ে নেয়াই তার কাজ। একের পর এক প্রতারণার ফাঁদ পেতে অসংখ্য যুবককে করেছে নিঃস্ব।এক স্বামী রেখে পরকীয়ায় জড়ান অন্যের সঙ্গে কিছু দিন যেতেই পুনরায় জড়ান অন্যের সঙ্গে। এভাবে দশটি বিয়ে করেছেন তিনি। প্রতি বছরই যেন তার নতুন নতুন স্বামী সংসার আর বাসর ঘর হয়। আর এসব বিয়ের পেছনে রয়েছে বড় ধরণের প্রতারণা মাধ্যমে টাকা-পয়সা আত্মসাতের গল্প। বলছিলাম বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার গাওলা গ্রামের আছাদ মোল্লার মেয়ে সারমিন খাতুনের(৩২) কথা। এখন বিয়ে করাই যেন সারমিনের নেশা এবং পেশা হয়েছে।
জানা যায়, এই তরুণী নিজ জেলা বাগেরহাটেরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিয়ে করেছেন। প্রথমে সমাজের প্রতিষ্ঠিত উচ্চবিত্ত টাকাওয়ালা পুরুষদের টার্গেট করে। তারপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে মোটা অঙ্কের কাবিন নিয়ে বিয়ে করেন। কাবিনের সময় তার কথিত চাচা বিয়ের সাক্ষী হিসেবে থাকতেন।
সারমিন আক্তারের প্রতারণার সর্বশেষ ‘শিকার’ হয়েছেন বাগেরহাটের চিতলমারীর দক্ষিণ শৈলদাহ এলাকার বাসিন্দা নওশের শেখ ছেলে কাতার প্রবাসী খুর্শিদ(৩৫) আলম। এরপরই এক এক করে ওই তরুণীর দশ বিয়ের বিষয় ফাঁস হয়। টাকা আত্মসাৎ ও ১১ বিয়ের অফিযোগ এনে প্রবাসী খুর্শিদ আলম এর পিতা মোঃ নওশের শেখ বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মোঃ নওশের শেখ অভিযোগে জানান, আমার ছেলে খুর্শিদ আলম এর সাথে মোল্লাহাট উপজেলার বড় গাওলা গ্রামের আছাদ মোল্লার মেয়ে শারমিন খাতুন(৩২)গত ২০২৩ সালের ৫ জুন দেড় লক্ষ টাকা রেজিস্ট্রি কাবিন মূলে বিবাহ হয়। আমার ছেলে খুর্শিদ আলম দীর্ঘ প্রায় ১৮ বৎসর যাবৎ মালয়শিয়ায় বসবাস করে। সে মাঝে মধ্যে দেশে ফিরে আসে। বিবাহের পর তারা একত্রে আমার বাড়ীতে প্রায় ৩ মাস সংসার করে। পরবর্তী আমার পুত্র বধুর চালচলন, আচার আচরনে সন্দেহ হলে তার আসল রূপ ধরা পড়ে। আমি বিশ্বস্ত সূত্রে জানিতে পারি যে, আমার পুত্রবধূ মোট ১১ জন পুরুষের সাথে সংসার করিয়াছে। যাহা আইনত: ও ন্যায়ত: বে-আইনী ও ইসলামী শরীয়ত বিরোধী। আমার ছেলে তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করিলে সে আমার ছেলেসহ আমাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। আমার ছেলের সাথে বিবাহের পূর্বে সে আমার ছেলের নিকট থেকে ছলে বলে কলে কৌশলে বিভিন্ন ধরনের ছলচাতুরী ও প্রতারনার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় প্রায় ২০লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। পরবর্তীতে বিবাহের পর সে বিভিন্ন ধরনের ছলচাতুরীর মাধ্যমে তার মা সামেলা বেগম ও তার কথিত চাচার প্ররোচনায় ও কুপরামর্শে আমার ছেলের নিকট থেকে আরো ৪লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে। আমার ছেলে তাদের কার্য কলাপের হাত থেকে বাঁচার জন্য পুনরায় মালয়শিয়ায় চলে যায়। আমার ছেলে বিদেশে যাওয়ার পর আমার পুত্রবধু শারমিন খাতুন তার মা এবং তার কথিত চাচার ইন্ধনে সে আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও জানে মেরে ফেলার হুমকি প্রদর্শন করে। বর্তমানে আমি আমার পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগিতেছি। তিনি এ ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে শারমিন আক্তার ঢাকার গাজীপুর জেলার খলিল আহমেদ, বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার আলমগীর হোসেন, ঢাকার নারায়ণগঞ্জের জালাল আহমেদ, বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার মোহাম্মদ মুরাদ হোসেনসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১১ জনকে বিয়ে করেন।
তারা অভিযোগ করে বলেন, শারমিন সম্পর্ক করেই দ্রুত বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। সে কখনো নিজের বিষয়ে পরিস্কার করে বলে না। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই সে যে কোন কৌশলে সম্পর্ক ছিন্ন করে মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে আমাদের নিঃস্ব করেছেন । তারা জানান, এধরনের কাজ যারা করে তারা সমাজের শত্রু। শারমিন যে কাজ একের পর এক করে যাচ্ছে তার শাস্তি হওয়া উচিত । এটি না করলে তার এ ধরনের কর্মকাণ্ডে অনেক যুবককেই পথে বসতে হবে।
এ বিষয়ে শারমিন আক্তার বলেন, আমি বিভিন্ন কারনে কয়েকটি বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি। সবাই আমার সাথে প্রতারনা করেছে। এখন আমার নামে মিথ্যা কথা রটাচ্ছে। আমি কারো কাজ থেকে কোন টাকা আত্মসাৎ করিনি।

Related Articles

Back to top button