জীবন যাপনস্বাস্থ্য

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কি করবেন?

আদৃতা ইসলামঃ   এই গরম তো আবার শুরু হচ্ছে বৃষ্টি।  আর এর সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে আমাদের শরীর। আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সুস্থতা ধরে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত শক্তিশালী হবে, ততই খাপ খাইয়ে নেওয়া সহজ হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি যা বিভিন্ন অসুখকে দূরে রাখতে সাহায্য করে, বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনের দিনগুলোতে। নানা ধরনের অসুখ থেকে বাঁচতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখে এমন খাবার খেতে হবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবারের সবচেয়ে ভালো দিক হলো, সেগুলো সহজেই সবার রান্নাঘরে পাওয়া যায়। সুতরাং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে এমন খাবার কেনার জন্য বাইরে যাওয়ার বা আলাদা করে খরচ করার দরকার নেই। জেনে নিন ৬টি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার সম্পর্কে যা আপনি রান্নাঘরেই পাবেন-

গোল মরিচঃ প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে গোল মরিচ। উপকারী এই মসলায় প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন সি বেশি থাকে যা একে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল করে তোলে এবং টক্সিনকেও দূরে রাখে। তাই সুস্থতার জন্য প্রতিদিনের খাবারে অল্প করে গোল মরিচ রাখার চেষ্টা করুন।

রসুনঃ সর্দি এবং কাশি দূর করার জন্য পরিচিত একটি ভেষজ হলো রসুন। এটি অন্যতম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী খাবার হিসেবেও কাজ করে। রসুনে এমন কিছু যৌগ রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন রসুন খাওয়ার অভ্যাস করুন। বিশেষ করে সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেলে উপকার পাবেন।

আদাঃ গলা প্রশমিত করে এবং বুকে জমা কফ থেকে মুক্তি দিতে কাজ করে আদা। প্রতিদিন আদা চা খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই। এটি আমাদের সুস্থতার জন্য নানাভাবে কাজ করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেশন বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ আদা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও দারুণ কার্যকরী। এটি আমাদের প্রায় সবার রান্নাঘরেই পাওয়া যাবে।লেবুঃসাইট্রাস জাতীয় ফল লেবু। এটি সাধারণ সর্দি দূরে রাখতে বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। এটি মূলত অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-সেপটিক। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত ভিটামিন সি উপাদান থাকায় এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। প্রতিদিন প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত ভিটামিন সি খেলে তা আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

হলুদঃবাঙালি অধিকাংশ রান্নায়ই হলুদ ব্যবহার করা হয়। এটি রান্নায় কেবল স্বাদ ও গন্ধই যোগ করে না, সেইসঙ্গে অনেক পুষ্টিও শরীরে পৌঁছে দেয়। হলুদের রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য এবং এটি রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা তৈরিতে সহায়তা করে। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত হলুদ রাখতে হবে খাবারের তালিকায়। এতে সুস্থ থাকা সহজ হবে। গরম দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলেও অনেক উপকার পাবেন।

মধুঃ মধুর উপকারিতা সম্পর্কে কম-বেশি সবারই জানা আছে। খাঁটি মধু খেলে মিলবে নানা উপকার। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে মূখ্য ভূমিকা রাখতে পারে। মধুতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড এবং পরাগ রয়েছে, যা এটিকে অ্যান্টিসেপটিক করে এবং মৌসুমী অ্যালার্জি থেকে মুক্তি দেয়।

এই খাবারগুলো ছাড়াও কিছু টিপস রয়েছে যা আপনাকে ফিট থাকতে এবং প্রাকৃতিকভাবে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। ওজন এবং রক্তে শর্করার ওপর নজর রাখুন। ডায়েটে পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করুন। সুষম ডায়েট করুন। দৈনিক ৮ ঘণ্টা ঘুমান। এতে নিজেকে একজন সুস্থ ও সুখী মানুষ হিসেবে আবিষ্কার করা আপনার জন্য সহজ হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button