স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তদবিরের মেসেজ দিয়ে ভুয়া রাষ্ট্রপতি গ্রেফতার
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা: সামন্ত লাল সেনের মোবাইলে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির পরিচয় দিয়ে একটি নম্বর থেকে একজন নার্সকে বদলির সুপারিশের জন্য দুটি এসএমএস করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মেসেজ দুটি ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের কাছে পাঠান। ডিবি বিষয়টি তদন্ত করে দেখে, রাষ্ট্রপতির মোবাইল থেকে অথবা রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মোবাইলে কোনও মেসেজ দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ নার্সকে বদলির সুপারিশের মেসেজটি ছিল ভুয়া।
তদন্তের এক পর্যায়ে অভিযান চালিয়ে ভুয়া রাষ্ট্রপতি পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। পাবনা জেলার সুজানগর থেকে। তার নাম মো. সিরাজ। সিরাজকে যখন গ্রেফতার করতে ডিবি পুলিশ তার বাসায় যায় তখন সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। বুধবার (৩ এপ্রিল) মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকের এ সব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, সম্প্রতি সিলেট এম.এ.জি ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নবীনা খাতুন ও পারভীন আক্তারকে বদলির জন্য নিজেকে রাষ্ট্রপতি পরিচয় দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের মোবাইলে মেসেজ পাঠায় সিরাজ। এর আগেও সে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এপিএস-২, মন্ত্রী, এমপি এবং বড় বড় ব্যবসায়ী পরিচয়ে প্রতারণা করেছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, ভুয়া রাষ্ট্রপতির পরিচয় দিয়ে গ্রেফতার সিরাজ একাধিক এমপির ভুয়া ডিও লেটার দিয়েছে। ডিও লেটার দিয়ে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বদলির জন্য তদবির করেছে। গ্রেফতার সিরাজ অষ্টম শ্রেণি পাশ। সে বিয়ে করেছেন তিনটি। এরমধ্যে একজন নার্স, একজন শিক্ষক। আট মাস আগে সে আরেকটি নতুন বিয়ে করেছে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ছাড়াও সিরাজ বিভিন্ন এমপি ও মন্ত্রীদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা করেছে। প্রতারণাই তার পেশা। অষ্টম শ্রেণি পাশ হলেও সে প্রতারণার বিষয়টি ভালোভাবে রপ্ত করেছে। প্রতারণার পর সিম ফেলে দিতেন পানিতে।
ডিবি প্রধান বলেন, সিম কেনার পর ট্রুকলারে নম্বর সেভ করতো রাষ্ট্রপতির নামে। তদবিরের জন্য যে সিম ব্যবহার করতো গ্রেফতারকৃত সিরাজ সেই সীম মেসেজ দিয়েই সিমটি পানিতে ফেলে দিতো। এরপর থানায় জিডি করতো তার সিম হারিয়ে গেছে। নতুন সিম কিনে আবার সে একইভাবে প্রতারণা করে ফেলে দিতো। সিম পানিতে ফেলে জিডি করার অর্থ হলো, পুলিশ তাকে ধরলে সে বলতো তার সিম হারিয়ে গেছে, সে জিডিও করেছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
সিরাজ রাষ্ট্রপতির নাম কেন ব্যবহার করলো এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, রিমান্ডে এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কেন রাষ্ট্রপতির নাম ব্যবহার করেছে।
হারুন অর রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এমপি, মন্ত্রী এমনকি সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির নাম ব্যবহার করে যারা প্রতারণা করেছেন এমন সবাইকে ডিবি আইনের আওতায় এনেছে।
ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ এডিসি মো. সাইফুর রহমান আজদের নেতৃত্বে অভিযানটি চালানো হয় বলেও জানান তিনি।