নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রতারণার ফাঁদ(১ম পর্ব) ডিজটাল বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে অনলাইন প্লাটফর্ম। আর এই প্লাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে অসহায়ত্বের দোহায় দিয়ে অসাধু উপায়ে একটি চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা । এইসব অপরাধীরা প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতারণা, যেন কেউ দেখারও নেই বলারও নেই। আর এইসব লোভনীয় ফাঁদে কেউ একবার পা দিলেই হচ্ছে তার সর্বনাশ । এই ফাঁদে আটকাচ্ছেন উচ্চ বিত্ত থেকে সাধারন মানুষসহ আমাদের রেমিটেন্স যোদ্ধারাও। ইউটবের ভিউ বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন কিছু ইউটিবাররা। তাই তারা কনটেন্ট যাচাই বাছাই ছাড়াই বানাচ্ছেন চটকদার ভিডিও। এমনি একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেমিটেন্স যোদ্ধা জানালেন কিভাবে তিনি হয়েছেন প্রতারনার শিকার। তিনি জানালেন রমজান মাসের শুরুতে ইউওটিবে তিনি একটি ভিডিও দেখেন । যেখানে এক অসহায় মা তার সন্তানকে মাদ্রাসায় পড়ানোর জন্য সাহায্য চাইছেন, এবং সেই সাথে তিনি কম বয়সী , লোকজন বিভিন্ন কথা বলে বিধায় তিনি কোথাও কাজ নিতে পারছেননা। তাই যদি কোন সহৃদয়বান ব্যক্তি তার সন্তানসহ তার দ্বায়িত্ব নেন তাহলে তার কস্ট দূর হয়। তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চান। যেখানে তিনি নিজের নাম পারভীন উল্লেখ করেছিলেন এবং নিজেকে এতিম বলে পরিচয় দিয়েছিলেন । এই মর্মে এই প্রবাসী তাকে তাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশে শুরু হয় কথোপকথন । একপর্যায়ে পারভিনের পেতে রাখা প্রেমের ফাদে জড়িয়ে পড়েন । বিয়ে করতে চান তাকে । তিনি সেলাই মেশিনের কাজ জানেন বলে একটি সেলাই মেশিন কেনার জন্য নেন ১০০০০/- এর পর তার ছেলের হাত ভেঙ্গেছে ,অর্থাভাবে চিকিৎসা হচ্ছেনা তাই আবারও ১০০০০০/- নেন । তার একটি স্মার্ট ফোন দরকার যার জন্য নিয়েছেন ১৫,০০০/- । এভাবে বিভিন্ন অযুহাতে নিতে থাকে টাকা । এর পর আসে বিয়ের প্রস্তুতি হিসেবে বিভিন্নভাবে টাকার আবদার, গলার চেইন বাবদ নেন ৫০,০০০/- , তারপর বিয়ের কথা বললে আসে বিভিন্ন টালবাহানা । এরপরে আসে ভাই এর প্রসঙ্গ তার ভাই থাকে কুমিল্লায় সে এসে আয়োজন করে বিয়ে দিবে এমনটাই জানায় । বিয়ের আয়োজনের জন্য আরও ২৫,০০০/- নেয় কোরবানীর এক সপ্তাহ আগে। এর পর বিয়ে পাকা হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় আবারও টালবাহানা । এর পর পারভীন ফোন করে জানায় তার দুলাভাই এর ভাই স্ট্রোক করেছে তাই বিয়ের দিন পেছাতে হচ্ছে । এরপর কেটে যায় বেশ কয়েকদিন পারভিন আর ফোন দেয়না বা কল রিসিভ ও করেনা । টানা কয়েকদিন কল করার পরে একজন ফোন ধরে জানায় তারা মার্কেটে গিয়েছে। এভাবে কেটে যায় আরও কয়েকদিন প্রায় ২০ দিন পরে পারভীন ফোন করে জানায় তার বড় ভাই মারা গিয়েছে । কুমিল্লায় তাদের জমি জমা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে । তাই আরোও ১০,০০০/- দিলে বিয়ে হবে এই বলে ফোন রেখে দেয় পারভীন। ঘটনা এখানেই শেষ হলে পারত কিন্তু তা হয়নি। ঘটছে আরও নাটকীয়তা এর কয়েকদিন পরেই সেই মেয়েকে দেখা যায় অন্য এক ইউটিউবের চ্যানেলের ভিডিওতে । অন্য নামে অন্য পরিচয়ে। যেখানে সে নিজেকে রেখা বলে পরিচয় দেয়, গ্রামের বাড়ি সিলেটে , মা আছে বাবা মারা গেছেন, তার একটি পুত্র সন্তান রয়েছে । সে আবারও একইভাবে সাহায্যের আবেদন করে। ভুক্তভোগীর নজরে আসে সেই ভিডিও । নতুন একটি ভিডিও মানে নতুন প্রতারনার ফাঁদ ।এই ফাদে আবারও আটকাচ্ছেন কেই হয়ত দেশি নয়ত প্রবাসী। এর পরে আবারও ভিন্ন নামে ভিন্ন পরিচয়ে (সাবানা, কবিতা) নামে চলছে তার ভিডিও। তবে এর শেষ কোথায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রতারক কি বলে। র-নিউজ থেকে পারভীনের মোবাইল নং এ কল করা হলে সে টাকা নিয়েছে বলে স্বীকার করে । এবং সাহায্য হিসেবে নিয়েছে। বিয়ে করতে চেয়ে যে প্রলোভন দেখিয়েছে সেটা জানতে চাইলে কথা বলতে চায়না বলে কল কেটে দেন। এরপর ভুক্তভোগীকে ফোন করে প্রতারক জানায় পুলিশ বা গনমাধ্যম কাউকে জানিয়ে কোন লাভ হবে না। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায় পারভীন/ রেখার বিকাশ নং এ এভাবে বড় অংকের টাকা আসছে এখনো । হয়ত আবারও কেই আটকে পড়েছেন এই রেখা /পারভীনের ফাদে। সে জানায় সে বসবাস করে আশুলিয়ায় বেদে পল্লিতে। এই ঘটনাটি এমন একটা সময় ঘটছে যখন বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান “হাবিবুর রহমান” কাজ করছেন এই বেদেদের জীবন মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ঠিক তখনই । বাংলাদেশের মাননীয় প্রাধানমন্ত্রী যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্চছেন নিরলস ভাবে ঠিক তখনই এই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগের অপব্যবহার করে অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছেন কিছু সুযোগ সন্ধানী । এইসবে প্রশাসন কি একটু নজর দিবেন?
পরের পর্ব শীঘ্রই আসছে… চোখ রাখুন RAW NEWS এ।