র-নিউজ ডেস্কঃ বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য পূরণ করতে না পারায় রিজার্ভ নিয়ে অসন্তুষ্ট আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ঢাকা সফররত দাতা-সংস্থার প্রতিনিধিদল এ অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে রিজার্ভ নিয়ে তাদের মতামত বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করেছে।আইএমএফ প্রতিনিধিদলের এক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, রিজার্ভের লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছে তা চেষ্টা করেও পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। এজন্য রিজার্ভে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। তবে, গভর্নর না থাকায় ভারপ্রাপ্ত গভর্নর এ বিষয়ে মতামত জানাতে পারেননি। প্রতিনিধিদল বর্তমান লক্ষ্য মাত্রা ২৫ বিলিয়ন থেকে আগামী ডিসেম্বর ও মার্চের জন্য কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছে।বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এসব কথা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর ও এক নম্বর ডেপুটি গভর্নর কাজী সায়েদুর রহমান, ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের, সাজেদুর রহমান খানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।বৈঠকে অংশ নেওয়া এক সূত্র জানায়, আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে আগের শর্তানুযায়ী বৈঠক করছে সংস্থাটির সদস্যরা। রিজার্ভ, বাজারভিত্তিক ডলারে রেট, ঋণখেলাপি, রাজস্ব সংস্কার, তারল্য ব্যবস্থাপনাসহ ৪৭ শর্তে আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দিতে রাজি হয়। বাংলাদেশ অধিকাংশ শর্ত পূরণ করতে পারলেও রিজার্ভে উন্নতি, কর-জিডিপি অনুপাত এবং বাজারভিত্তিক ডলার রেট করতে ব্যর্থ হয়। এসব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও বাস্তবতার আলোকে শর্তপূরণে আরও সময় পেতে পারে বাংলাদেশ।আইএমএফের শর্তানুযায়ী, সেপ্টেম্বরে নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভের (এনআইআর) পরিমাণ ২৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার রাখার কথা ছিল। জুলাইয়ের জন্য ছিল ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। তবে, আজ বুধবার রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক শূন্য ৭ বিলিয়ন ডলার। আর সেখান থেকে অন্যান্য দায় বাদ দিলে রিজার্ভ ১৮ বিলিয়নের নিচে নেমে যায়।বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা ছিল আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান মাসুদ বিশ্বাস। বিশেষ কারণে তিনি বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেননি। এ কারণে তার বিষয়গুলো নিয়ে আইএমএফ কোনো প্রশ্ন করেননি। একটি সূত্রে জানা গেছে, বিএফআইইউ কার্যক্রম ও দেশের অর্থপাচার রোধে সংস্থাটি কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাওয়া হতে পারে আইএমএফের পক্ষ থেকে।আইএমএফের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘আইএমএফের সঙ্গে গভর্নরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় একাধিক দল অংশ নেয়। আগামী ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত বিশদ আলোচনার মধ্যদিয়ে শেষ হবে।’দেশের ব্যাংক, রাজস্ব ও পুঁজিবাজারসহ মোট ৪৭টি সংস্কার প্রস্তাবের দেয় দাতা সংস্থাটি। সংস্কার প্রস্তাব সংক্রান্ত দাবি ধাপে বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়। যার প্রথম কিস্তির অর্থছাড় করে গত ফেব্রুয়ারিতে। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ নভেম্বরে মিলবে এমন আভাস সংশ্লিষ্টদের।