মাধবী কুন্ডঃ স্মার্টফোন ও কম্পিউটার এখন আমাদের যাপিত জীবনের অতিজরুরি অনুষঙ্গ। এর ব্যবহার যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে চোখসহ শরীরের নানাবিধ সমস্যা। যেমন চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়া, চোখে কম দেখা, মাথাব্যথা, চোখে ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা, মাজা বা কোমরে ব্যথা। এমনকি মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সমষ্টিগতভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এ সমস্যাকে বলে কম্পিউটার ভিশিন সিন্ড্রোম। স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের ক্ষতিকর রশ্মি এবং এর ব্যবহার থেকে চোখ বাঁচাতে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। এক্ষেত্রে যেসব নিয়ম মানা উচিত তা হলো-মোবাইলের উজ্জ্বল আলো বহুক্ষেত্রেই চোখে যন্ত্রণা দেয়, বিশেষ করে অন্ধকারে। সেই ক্ষেত্রে মোবাইলের ডার্ক মুড অর্থাৎ ডার্ক থিম ব্যবহার করুন।অ্যান্টি গ্লেয়ার প্রোটেক্টর ব্যবহার করুন। এতে চোখের ওপর ক্ষতিকর নীল রশ্মির প্রভাব কম পড়বে। চোখ শুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে আসবে। অনেক বেশি উজ্জ্বল কিংবা একেবারেই অনুজ্জ্বল পর্দা (ডিসপ্লে) এবং এর বৈপরীত্য কোনোটাই চোখের জন্য ভালো নয়। এগুলোর সামঞ্জস্যপূর্ণ যাতে থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যন্ত্রের নির্ধারিত (বিল্টইন) উজ্জ্বলতা সেটিংস ব্যবহারই এক্ষেত্রে উত্তম।প্রায় প্রতিটি মোবাইল ফোনেই থাকে ডিজিটাল ওয়েলবিং ফিচার। এই ফিচার ব্যবহার করে স্ক্রিন টাইম কমানোর চেষ্টা করতে পারেন। বারবার চোখের পলক ফেলুন। তাতেও চোখ ভিজে থাকবে। আধাঘণ্টা পর পর পরিষ্কার পানির ঝাপটা দিয়ে চোখ ধুয়ে নিন।
অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের জন্য নাইট লাইট এবং আইফোনের জন্য নাইট শিফট সুবিধা ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ফিচারের ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পর্দার রঙ ও উজ্জ্বলতায় সামঞ্জস্য আসে।২০ মিনিট টানা ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকলে তার পর অন্তত ২০ সেকেন্ড ২০ ফুট দূরের কোনো কিছুর দিকে তাকিয়ে থাকুন। চোখের একেবারে কাছে না ধরে ১৬ থেকে ১৭ ইঞ্চি দূরে রাখুন মোবাইল ফোন। তাতেও চোখে কম চাপ পড়বে।স্মার্টফোনে লেখার আকার বা ফ্রন্ট সাইজ বড় রাখা ভালো। ছোট আকারের লেখার ব্যবহার চোখের ওপর চাপ ফেলে এবং ক্ষতি করে। বড় আকারের লেখা সহজে পড়াও যায়।কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিছু নিয়ম মানতে হবে। যেমনÑ একনাগাড়ে বহুক্ষণ কম্পিউটার ব্যবহার করা যাবে না। আধাঘণ্টা বা ৪৫ মিনিট ব্যবহারের পর ব্রেক দিতে হবে ১০ থেকে ১৫ মিনিট। কম্পিউটারের মনিটর চেষ্ট লেবেলে রাখতে হবে। হ্যান্ড রিস্ট ও কিবোর্ড একই সমান্তরাল লেবেলে রাখতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, যখনই চোখের ন্যূনতম সমস্যা দেখা দেবে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ চোখ অতিমূল্যবান বস্তু। অবহেলায় আজীবনের জন্য ক্ষতি ডেকে আনবেন না।