উন্নয়ন অগ্রগতিশিরোনাম

আম সঠিকভাবে সংক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে নষ্ট হবে না

র-নিউজ ডেস্কঃ প্রতিবছরই রাজশাহীতে বাড়ছে আমের উৎপাদন। চাহিদা মাফিক জোগানের পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করা হয় এই আম। একইভাবে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। তবে সংরক্ষণের অভাবে প্রতিবছর ৩০ শতাংশ আম নষ্ট হয়.পাশাপাশি ভালো দাম না পাওয়ায় চাষি ও ব্যবসায়ীদের অবহেলাতেও আম নষ্ট হয়ে থাকে। ফলে মোট উৎপাদনের ৭০ শতাংশ আম ভালো থাকে। সংশিষ্টরা বলছেন, আম সঠিকভাবে সংক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে নষ্ট হবে না। আম নষ্ট না হলে চাষি ও ব্যবসায়ীদের লোকসান হবে না। অপরদিকে সংরক্ষিতভাবে আমগুলো চাষি ও ব্যবসায়ীরা সুবিধা মতো সময়ে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবেন। এতে করে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হবে। শুধু তাই নয়, মৌসুমের পরেও পাওয়া যাবে আম।জানা গেছে, পরিপক্ক হওয়ার পরে জাতভেদে বাগানের আম খুব কাছাকাছি সময়ে পাকে। এতে সব চাষি ও ব্যবসায়ীরা বাগানের আম নামিয়ে ফেলে। গাছে আম পাকা দেখা দিলে না পাড়লে পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়ে আম নামিয়ে নিতে হয়। এতে দেখা যায়, অনেকেই আম নিয়ে হাটে বা বাজারে এসেছেন বিক্রির জন্য। ফলে বাজারে আমাদের আমদানি বেড়ে যায়। এতে করে আমের দামে ভাটা পড়ে। বেশি দামের আশায় অপেক্ষা করলে সঠিক সময়ে না পাড়া ও পরিবহনের সময়ে আম নষ্ট হয়ে থাকে।রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ মৌসুমে আমের আবাদ হয় ১৭ হাজার ৯৪৩ মেট্রিকটন। আম উৎপাদন হয় দুই লাখ ১৪ হাজার ৪৮৩ মেট্রিকটন। ২০২১-২২ মৌসুমে ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৬ হাজার ১৫৬ মেট্রিকটন। চলতি মৌসুমে (২০২২-২৩) রাজশাহীতে মোট ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। এ বছর সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিকটন।আম চাষি মনি মিয়া বলেন, পরিপক্ক অবস্থায় রোদ আর গরম বেশি হলে আম দ্রুত পেকে যায়। এতে করে দ্রুত সময়ের মধ্যে আম পেড়ে বিক্রি করতে হয়। যদি আম সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকতো তাহলে সময় মতো ভালো দামে বিক্রি করা যেত। যেহেতু রাজশাহীতে বেশি আম উৎপাদন হয়। এই আমের চাহিদা বাইরের জেলাগুলোতেও রয়েছে। এই এলাকায় আম সংরক্ষণ করে রাখার ব্যবস্থা থাকলে সুবিধা মতো সময়ে বিক্রি করে আমারা ভালো দাম পেতাম।আম ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, বাগানে আম পাকা শুরু হলে অল্প দিনের মধ্যে সব পেকে যায়। ফলে এক জাতের আম পাড়তে পাড়তে অন্য জাতের আম পেকে যায়। এরপরে বিক্রি করতে হয়। এতে সমস্যা হয় হাটে বাজারে প্রচুর আমের সরবারাহ বেড়ে যায়। ফলে দাম কমে যায়। তবে আম সংরক্ষণের অভাবে আম নষ্ট হয়। তবে শুরু দিকে আমের দাম কম থাকলেও শেষের দিকে বেশি থাকে।রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আম পাকার আগে কিছু ঝড়ে পড়ে নষ্ট হয়। আর আম পাকার পরে কিছু নষ্ট হয়। সাধারণত আম পাকার পরে সংরক্ষণের অভাবে ৩০ শতাংশ আম নষ্ট হয়। এর মধ্যে দাম ভালো না পাওয়া, চাষি ও ব্যবসায়ী অবহেলার কারণেও আম নষ্ট হয়। সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলে নষ্টের হাত থেকে অনেক আম বেঁচে যেত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button