র-নিউজ ডেস্কঃ লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এক নববধূ শ্বশুরবাড়িতে প্রায় দুই শত বই নিয়ে গেছেন। স্বপ্ন দেখছেন শ্বশুর বাড়ির একটি কক্ষে ‘বউ-শাশুড়ির বই ঘর’ নামে একটি লাইব্রেরি গড়বেন। ওই লাইব্রেরিতে এলাকার বউ শ্বাশুড়িসহ স্কুল-কলেজের ছাত্রীরা এসে বই পড়বে।২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নববধূ মেহেরুন নেছা মুমু বাবার বাড়ি থেকে বই নিয়ে উপজেলার চর ফলকন গ্রামের শ্বশুর বাড়িতে আসেন। বই ছাড়াও বাহারি পদের দেশীয় পিঠাও নিয়ে আসেন। ওইসব পিঠা প্রতিবেশী ও আত্নীয়-স্বজনদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়েছেন মুমুর শ্বাশুড়ি কামরুন নাহার।মুমু চর ফলকন গ্রামের ডা. অবাদুল হক চেয়ারম্যান বাড়ির মহিউদ্দিনের মেয়ে। একই গ্রামের রমজান আলী মৌলভী বাড়ির মাকছুদুর রহমানের ছেলে তরুণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এমরান হোসেন নিখিলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সে ঢাকার ইডেন কলেজের ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।২৪ ফেব্রুয়ারি মুমুর বউভাতের আয়োজন হয়। বউভাত অনুষ্ঠানের একদিন পরেই শ্বশুর বাড়িতে বই নিয়ে আসেন এ নববধূ।মুমুর পরিবার ও স্বজনরা জানায়, বই পড়তে তার ভালো লাগে। বই সংগ্রহ ও পড়া তার প্রিয় শখ। শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসা সব বই তার পড়া হয়েছে। এসব বইয়ের বেশির ভাগই তার বিভিন্ন সময়ের জমানো টাকায় কেনা। অল্প কিছু বই জন্মদিনসহ বিভিন্ন দিবসের উপহার, ৮-১০টি বই তার স্কুল-কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পুরস্কার হিসাবে পাওয়া।
মুমুর মা ছালেহা বেগম জানান, তার মেয়ের প্রিয় শখ বই পড়া। শাড়ি-চুড়ি, কসমেটিকসে আগ্রহ নেই। ছোট বেলা থেকেই টাকা জমিয়ে বই কেনা চিল তার অভ্যাস। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার সময় মেয়ের সংগ্রহে থাকা সকল বই নিয়ে যায়।নববধূর শ্বাশুড়ি কামরুন নাহার বলেন, আমার মেয়ে নেই, দুই ছেলে। ছোট ছেলে বুয়েটে পড়ে, বাড়িতে আমি একা। বড় ছেলের সুবাদে একটা মেয়ে পেয়েছি। এই লক্ষ্মী মেয়ে আসার সময় অনেক বই নিয়ে আসে। এতে আমি খুবই খুশি হয়েছি। এখন থেকে আমিও টাকা জমিয়ে বউকে বই কিনে দেবো।নববধূ মেহেরুন নেছা মুমু বলেন, বই কেনা, বই পড়া আমার শখ। বই উপহার পেতে আমার খুব ভালো লাগে। অনেক দিন থেকে জমানো বইগুলো বাবার বাড়িতে রেখে আসতে মন চাইছিল না; সঙ্গে করে নিয়ে আসলাম। স্বপ্ন দেখছি শ্বশুর বাড়িতে ‘বউ-শাশুড়ির বই ঘর’ নামে একটি লাইব্রেরি গড়বো। এলাকার সকল বউ-শাশুড়ি বই পড়বে।শ্বশুর মাকছুদুর রহমান বলেন, ছেলের বউ বাবার বাড়ি থেকে আসতে বই নিয়ে আসছে; বিষয়টি খুবই দারুণ। এমন ছেলের বউ পাওয়া সৌভাগ্য।