চাঁদে যাওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল ১৯৫৭ সালে
র-আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ১৯৬২ সালে তার বিখ্যাত ভাষণে আমেরিকানদের চাঁদে যাওয়ার প্রত্যয় তুলে ধরে বলেছিলেন, ‘চাঁদে যাওয়া সহজ নয় বলেই আমরা সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’এই ঘোষণার সাত বছর পর মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা অ্যাপোলো কর্মসূচির মাধ্যমে ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে অন্তত ছয়টি মিশনের মাধ্যমে প্রায় এক ডজন অভিযাত্রীকে চাঁদে পাঠিয়েছিল।ওই সময় এতে খরচ হয়েছিল প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বর্তমানে যা প্রায় ২৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্য মানের।এর পর অর্ধশত বছর পেরিয়ে গেছে। এই সময়ের মধ্যে চন্দ্র অভিযান অনেকটা আড়ালেই চলে গিয়েছিল বলা যায়।কিন্তু সম্প্রতি ভারতের চন্দ্রযান চাঁদের বুকে সফলভাবে অবতরণের পর চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অভিযানের বিষয়ে নতুন করে আগ্রহ দেখিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ওরাশিয়া।যদিও এই তিনটি দেশ এরইমধ্যে চাঁদে তাদের যান পাঠিয়েছে। তবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতের আগে কেউ পৌঁছাতে পারেনি।এমন অবস্থায় অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, দ্বিতীয় মহাকাশ প্রতিযোগিতা বা সেকেন্ড স্পেস রেস শুরু হতে যাচ্ছে কি না।কারা চাঁদে যেতে আগ্রহী এখন?অনেকে মনে করেন, চাঁদে যাওয়ার প্রতিযোগিতা মূলত শুরু হয়েছিল ১৯৫৭ সালে, যখন রাশিয়া তাদের মহাকাশ যান স্পুটনিক উৎক্ষেপণ করেছিল।
তবে ১৯৬৯ সালে মার্কিন মহাকাশ যান অ্যাপোলো-১১ এবং ১৯৭২ সালে অ্যাপোলো-১৭ চাঁদে মানুষ অবতরণ করার পর যেন প্রতিযোগিতা কিছুটা কমে এসেছিল।সর্বশেষ ২০২৩ সালে চাঁদ এবং মহাকাশের আরও গভীরে অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছে রাশিয়া, ভারত ও ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি।এরই মধ্যে নাসার আর্টেমিস ওয়ান মিশন চাঁদের কক্ষপথ ঘুরে এসেছে। এতে এমন একটি মহাকাশ যান ব্যবহার করা হয়েছে যেটি মানুষকে চন্দ্রপৃষ্ঠে নিয়ে যেতে সক্ষম।এদিকে ভারতের চন্দ্রযান-৩ মিশন ইতোমধ্যে সফলভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে এসেছে।স্পেসএক্স জাপানিজ বিলিয়নিয়ার ইউসাকু মায়জাওয়া এবং আরও আট যাত্রীকে নিয়ে চলতি বছরের শেষের দিকে ‘ডিয়ারমুন ভয়েজে’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদের চারপাশে ঘুরিয়ে আনবে।এটা হবে প্রতিষ্ঠানটির অন্তত ১০০ জন মানুষকে বহন করতে সক্ষম স্টারশিপ যানের প্রথম মিশন।আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ২০২৪ সালে তাদের পরবর্তী চন্দ্র অভিযান শুরু করবে বলে জানিয়েছে।এই অভিযানের নাম দেয়া হয়েছে আর্টেমিস টু। সংস্থাটি চাঁদে পাঠানোর জন্য চার জনের এক ক্রু দল ঘোষণা করেছে।নাসা জানিয়েছে, চাঁদে প্রথম পা রাখার ৫০ বছরের বেশি সময় পর আর্টেমিস টু নামে অভিযানে একজন নারীসহ চারজন অভিযাত্রীকে পাঠানো হবে। চাঁদে যেতে এই অভিযানটির সময় লাগবে ১০ দিনের মতো।নাসা তাদের আর্টেমিস থ্রি মিশনটি পাঠাবে ২০২৫ বা ২০২৬ সালে।এ ছাড়া চীন রাশিয়ার সাথে মিলে ২০৩৫ সালের মধ্যে চাঁদে একটি যৌথ ঘাঁটি স্থাপন করবে বলে জানিয়েছে।তবে এই প্রকল্পের বিস্তারিত এখনো কিছু জানা যায়নি।বিভিন্ন দেশ চাঁদে কেন যাচ্ছে?যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড-স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. ম্যাকডোয়েল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিবিসিকে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের মতো স্পেস পাওয়ার বা মহাকাশে যেসব দেশের যাওয়ার সক্ষমতা আছে তাদের লক্ষ্য হচ্ছে চাঁদে অভিযাত্রীদের বসবাসের জন্য একটি ঘাঁটি স্থাপন করা।তিনি বলেন, ‘মঙ্গল গ্রহের মতো স্থানে যাওয়ার আগে চাঁদ হচ্ছে প্রথম পদক্ষেপের মতো। আর মহাকাশের গভীরে ব্যবহার করার মতো প্রযুক্তির পরীক্ষা চালানোর জন্য চাঁদ সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা।’ ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের মহাকাশ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক ড. লুসিন্ডা কিং বলেন, পৃথিবীর তুলনায় চাঁদ থেকে কোন মহাকাশযান পাঠাতে কম জ্বালানির দরকার হয়।তিনি আরও বলেন, চাঁদে একটি জ্বালানির উৎস আবিষ্কার করা হয়েছে।সবাই জানে যে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পানির অস্তিত্ব রয়েছে। একে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনে ভেঙে ফেলা যায়। যাকে মঙ্গল বা মহাকাশের অন্য কোন স্থানে যাওয়ার জন্য মহাকাশযানের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে,’ বলেন ড. কিং।‘আর এটি হচ্ছে চাঁদে যাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি পড়ে যাওয়ার একটি কারণ, যাতে সেখানে পানির কোন একটি উৎসে মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা যায়।’ড. ম্যাকডোয়েল বলেন, ‘সাম্প্রতিক কয়েক বছরে মানবসভ্যতা মঙ্গলগ্রহ এবং তার বাইরে পৌঁছানোর চিন্তার পেছনে একটি ভিশন রয়েছে।’যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউরোপের পাশাপাশি চীন এবং ভারতের মতো দেশ স্পেস পাওয়ার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করছে বলে তিনি মনে করেন।
‘এসব দেশের সরকার চিন্তা করেছে যে, এটাই যদি ভবিষ্যত হয়ে থাকে তাহলে আমরা আমাদের দেশকে পিছিয়ে রাখতে চাই না।’নাসার মহাকাশযান অ্যাপোলোর অভিযাত্রীরা কয়েক দশক আগে চাঁদ থেকে যে পাথরের নমুনা এনেছিলেন তা থেকে পৃথিবী এবং চাঁদের ভূ-তাত্ত্বিক ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
টেক্সাসের হিউসটন সেন্টার ফর লুনার সায়েন্স এন্ড এক্সপ্লোরেশন এর লুনার জিওলজিস্ট ডেভিড ক্রিং বলেন, বর্তমান সময়ে অভিযাত্রীরা যে নমুনা সংগ্রহ করে আনবেন তা থেকে আগের তুলনায় আরো বেশি কিছু জানা যাবে।তিনি বলেন, ‘কেউ যদি সৌর জগতের বিবর্তনের উৎস সম্পর্কে জানতে চায় তাহলে চাঁদে যাওয়া ছাড়া… অন্য আর কোনো ভালো জায়গা নেই।’কারণ চাঁদের বায়ুমণ্ডল নেই বা কোন জলের প্রবাহ নেই, আবহাওয়া পরিবর্তন বা ক্ষয়সাধন কিছুই হয়নি, ফলে এটি প্রাথমিক অবস্থাতেই রয়ে গেছে।গত আগস্টে নাসা তাদের চন্দ্রাভিযানের সম্ভাব্য ১৩টি অবতরণের স্থানের বিষয়ে জানিয়েছে।এগুলোর সবকটিই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে, যেখানে জমে থাকা পানির সন্ধান পাওয়া গেছে।
এসব স্থান চাঁদের ভূতত্ত্ব, সেখানে জমে থাকা বরফ সম্পর্কে জানা এবং সেগুলোর নমুনা সংগ্রহের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান বলে মনে করেন বেথানি এলম্যান যিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির কেক ইন্সটিটিউট ফর স্পেস স্ট্যাডিসের সহযোগী পরিচালক।স্মিথসোনিয়ান ন্যাশনাল এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়ামের আন্তর্জাতিক মহাকাশ কর্মসূচির কিউরেটর ক্যাথলিন লিউয়িস চলতি বছরের অগাস্টে পপুলার সায়েন্স ডটকমকে নামে একটি ওয়েবসাইটকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, তিনি একে কোন দৌড় বা প্রতিযোগিতা মনে করেন না।“বরং ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো বিবেচনা করলে এটাকে অনেকটা ‘গোল্ড রাশ’ বা স্বর্ণের খনির দখলে বা সৌভাগ্যের সন্ধানে যে উন্মত্ত তৎপরতা দেখা গিয়েছিল তার সঙ্গে তুলনা করা যায়,” বলেন তিনি।অথবা অন্যভাবে বললে এটাকে ‘আইস রাশ’ বা বরফের খোঁজে তৎপরতা বলা যায়।সর্বশেষ ২০১৮ সালে বিজ্ঞানীরা মেরু এলাকায় জমে থাকা পানি বা ওয়াটার আইস বা বরফের সন্ধান পান।আর তারপর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া এবং ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরু যেখান বরফ রয়েছে সে অঞ্চলকে টার্গেট করেছে। পানিকে রকেটের জ্বালানি হিসেবে অথবা চাঁদে উৎপাদনের কাজে লাগানো যেতে পারে।লিউয়িস বলেন, মহাকাশ সংস্থাগুলো যদিও এই বরফ কীভাবে ব্যবহার করা হবে বা কী ধরণের প্রযুক্তি কতটুকু ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে এখনো খুব একটা নিশ্চিত নয়, ‘কিন্তু সবাই সেখানে যেতে চাইছে কারণ আমরা জানি যে সেখানে পানির বরফ (ওয়াটার আইস) রয়েছে।’তবে চন্দ্র যাত্রার এই প্রতিযোগিতার পেছনে শুধু চাঁদে বরফের আবিষ্কারের বিষয়টিই জড়িত নয় বলেও মনে করেন লিউয়িস।তার মতে, এর পেছনে কিছু রাজনৈতিক কারণও রয়েছে।তিনি বলেন, বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ের তুলনায় বর্তমানে চন্দ্রাভিযানে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি পুরোপুরিই ভিন্ন। সেসময় শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নই প্রথমবারের মতো চাঁদে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি তৈরি করছিল।তিনি মনে করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি সেসময় চন্দ্রাভিযানের বিষয়টিকে সমর্থন দিয়েছিলেন কারণ তার উপদেষ্টারা তাকে বুঝিয়েছিলেন যে, প্রযুক্তিগতভাবে এই প্রতিযোগিতায় জয় পাওয়া সম্ভব।অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়নও তাদের প্রযুক্তিগত সর্বোচ্চ সক্ষমতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল। যদিও মানুষসহ চাঁদে পাঠানোর মতো যান তৈরিতে বেগ পেতে হচ্ছিলো সোভিয়েতদের।সে সময় যুক্তরাষ্ট্র স্যাটার্ন ভি রকেট তৈরি করে যা ২০২২ সালে নাসার স্পেস লঞ্চ সিস্টেমের প্রথম ফ্লাইটের আগ পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী প্রযুক্তি ছিল।অনেকে বলেন, নাসার অ্যাপোলো ছিল মূলত চন্দ্রযাত্রায় সোভিয়েত ইউনিয়নকে পরাজিত করার একটি পদক্ষেপ। সেটা সফলও হয়েছিল।কিন্তু তখন চাঁদে স্থায়ীভাবে মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করার কোন দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা ছিল না।বর্তমানে বেশ কয়েকটি দেশ তো বটেই বেসরকারি কোম্পানিরও চাঁদে অভিযান চালানোর মতো প্রযুক্তিগত সক্ষমতা রয়েছে।মহাকাশে এখন আগের তুলনায় ভিড় বেড়েছে। মহাকাশে থাকা স্যাটেলাইটগুলো পৃথিবীর অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত।যেমন এগুলো যোগাযোগ ব্যবস্থা বহন করে, নানা ধরণের সংকেত আদান-প্রদান করে এবং ভূ-পৃষ্ঠে থাকা কৃষিকাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পানি ও অন্যান্য উৎস পর্যবেক্ষণ করে।এখনকার লক্ষ্যটা শুধু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা অর্জন নয়। এর পরিবর্তে দেশগুলো এখন বর্তমানে থাকা প্রযুক্তিগুলোই অর্জন করতে চাইছে যা অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা এবং সমৃদ্ধির পূর্বশর্ত।লিউয়িস বলেন, বর্তমানে চন্দ্র যাত্রার ঢেউ সেদিক থেকে দেখতে গেলে আগের তুলনায় ভিন্ন কারণ এগুলো শুধু এখন দুটি সুপার পাওয়ার দেশের বেসামরিক ছায়া প্রতিযোগিতাই নয় বরং অভ্যন্তরীণ ভাবে এগুলো অর্থনীতির সঙ্গে অনেক বেশি সংশ্লিষ্ট।তার মতে, গত ৩০ বছরে চীন তার অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রাখার জন্য মহাকাশ গবেষণার পরিমাণ বাড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে ‘গোল্ড রাশ’ বা স্বর্ণের অনুসন্ধান যেমন এক সময় এই মহামূল্যবান সম্পদের দখল নিয়ে যুদ্ধ বাঁধিয়েছিল, তেমনি চাঁদে যখন অনেক পক্ষের নিয়মিত সমাগম হবে, তখন এসব পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বেরও সম্ভাবনাও দেখা দেবে বৈকি।যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মহাকাশ গবেষণা প্রযুক্তি সংস্থা স্পেসএক্স এরও চাঁদে যাওয়ার মিশন রয়েছে।
তারা কেন চাঁদে যেতে চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে কোম্পানিটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের বাসযোগ্য প্রতিবেশীদের মধ্যে একটি এবং চন্দ্রযাত্রা মঙ্গলগ্রহ ও তার বাইরে মহাকাশ অভিযানের বিষয়ে মূল্যবান অভিজ্ঞতা সংগ্রহের সুযোগ করে দেয়।
যা বলছে নাসা
তাদের চন্দ্রাভিযানের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনটি কারণের কথা উল্লেখ করেছে, নতুন আবিষ্কার, অর্থনৈতিক সুযোগ বৃদ্ধি এবং নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করা।চাঁদে কেন নাসা আবার যেতে চায় এ সম্পর্কিত এক ভিডিওতে বলা হয়, চাঁদ বিজ্ঞানের জন্য গুপ্তধনের মতো।এটা আমাদের নিজেদের পৃথিবী, সূর্য এবং আরো উন্নত সৌর জগত নিয়ে নতুন আবিষ্কারের সুযোগ করে দেয়।চাঁদের গবেষণা থেকে পাওয়া জ্ঞান নতুন প্রজন্মের চিন্তা ও কাজকে অনুপ্রাণিত করবে।
নাসার এ পর্যন্ত বড় বড় সব কর্মসূচী ও অভিযানে সংস্থাটি যে পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে এবং তাতে যে নতুন প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ ও সক্ষমতা বেড়েছে তা সংস্কৃতির গঠনে কাজ করেছে।আর্টেমিস যুগে প্রবেশের এই ঘটনা বর্তমান প্রজন্ম ছাড়াও ভবিষ্যত প্রজন্মকে তুলে ধরবে।আর এই বর্তমান আর্টেমিস প্রজন্মের কর্ম সফলতা ও অর্জনই আগামী দিনের চন্দ্রাভিযানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করে নাসা।নাসার ওই ভিডিওতে বলা হয়, চাঁদে যাত্রা নিয়ে এ পর্যন্ত যে হাজার হাজার কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে তা লুনার অর্থনীতি তৈরি করছে। যার আওতায় ভবিষ্যতে বিশ্ব জুড়ে আরও লাখ লাখ নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।সংস্থাটি বলছে, চন্দ্রাভিযান কোনো একটি দেশের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নয়, বরং চাঁদের গবেষণা একটি যৌথ প্রচেষ্টার অংশ।এ ছাড়া যেহেতু মঙ্গল যাত্রারও একটি লক্ষ্য রয়েছে তাই আরেকটি মহাজাগতিক স্থানে একটি কমিউনিটি স্থাপন করতে হলে কী কী করতে হবে তার ধারণা পাওয়া যাবে এই অভিযান থেকে।তাই চন্দ্রাভিযান এখন কোন একটি দেশের একক কোন অভিযান নয়, বরং এটি চাঁদ ও এর আশপাশে একটি কমিউনিটি গঠনের প্রয়াস যা বিজ্ঞানীদের ধারণা দেবে যে, অন্য কোন গ্রহে বেঁচে থাকতে হলে কী করতে হবে।
৫০ বছর ধরে চাঁদ নিয়ে শান্তিপূর্ণ গবেষণার পর চাঁদের বুকে নতুন একটি প্রজন্মকে পাঠাতে চায় নাসা যারা সেখানে দীর্ঘ সময় থাকবে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে আর্টেমিস শিবির স্থাপন করতে চায় নাসা।
সূত্র : বিবিসি