র-নিউজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ফ্রান্সসহ উন্নয়ন অংশীদারদের সহযোগিতা চেয়েছেন। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) গণভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকাস্থ ফরাসি রাষ্ট্রদূত মারি মাসদুপুই। এসময় এই আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে ফ্রান্সসহ উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ, আমাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। একসময় বাংলাদেশ দারিদ্র্য, বন্যা ও খরার দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। এখন যা ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।তিনি বলেন, তৃণমূলে ব্যাপক উন্নয়নের মাধ্যমে আজকের বাংলাদেশ সম্পূর্ণ ভিন্ন। দেশের প্রতিটি গ্রাম বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে এবং যোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। গ্রামীণ জনপদ অনেক পরিবর্তিত হয়েছে এবং দারিদ্র্য উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। সরকার গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতোমধ্যে যা শহর এলাকায় শুরু হয়েছে।রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের অবশ্যই প্রত্যাবাসন করতে হবে। তারা এখানে মাদক চোরাচালান, অস্ত্র ও মানবপাচারের মতো বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত।তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য ফ্রান্সসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি চাপ আরও বাড়াতে হবে।১৯৭১ সালে বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের চতুর্থ প্রজন্ম এখানে বসবাস করছে। পাকিস্তান ওদের আর ফিরিয়ে নেবে বলে মনে হয় না। আমরা আটকে পড়া পাকিস্তানিদের স্থায়ী পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা করছি।ফরাসি কোম্পানিকে বাংলাদেশের গ্যাস খাতে এবং গ্যাস অনুসন্ধানে বিনিয়োগের জন্য অনুরোধ জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা। এয়ারবাস ক্রয় ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণসহ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বিষয়েও আলোচনা করেন তারা।৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর একটি অভিনন্দন বার্তা শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই। ২০২১ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফর এবং ২০২৩ সালে ফরাসি প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রয়েছে।মাসদুপুই বলেন, এই সফরগুলো দেশ দুটির মধ্যে সম্পর্ককে আরও জোরদার করেছে। জলবায়ু সমস্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ পেতে সহায়তা করবে ফ্রান্স। তারা এদেশকে এই তহবিল ব্যবহারে অগ্রণী হিসেবে দেখতে চায়।ফরাসি রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ একটি উদাহরণ। ফ্রান্স বাংলাদেশকে সবুজ জ্বালানি উত্তরণে সহায়তা করতে চায়। দেশটি ব্লু-ইকোনমি এবং সাইবার নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায়।এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, অ্যাম্বাসেডর এট লার্জ মো. জিয়াউদ্দিন এবং মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।