জন দুর্ভোগশিরোনাম

রাজশাহীতে গরমে নাকাল প্রাণিকুল, মারা যাচ্ছে পাখি

রাজশাহী প্রতিনিধিঃ  দেশজুড়ে চলছে তীব্র দাবদাহ। ফলে শুধু মানুষই নয়, এমন অস্বাভাবিক গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে প্রাণিকুলও। কীভাবে এমন গরমে সামলে উঠবে এরা? রাজশাহী অঞ্চলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই নাকাল অবস্থায় মারা যাচ্ছে পাখি।২৯ এপ্রিল বেলা ৩টায় এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটি চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে গত বছরের ১৭ এপ্রিল রাজশাহীতে ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।টানা এই তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন রাজশাহীর মানুষ। ঠা ঠা রোদে পুড়ছে পথঘাট। সূর্যের তাপে গলে যাচ্ছে প্রধান সড়কের বিটুমিন। পুকুর, নালা, খাল-বিল শুকিয়ে গেছে। পদ্মাপারের এই শহরের অনেক গভীর নলকূপেও কিছুদিন ধরে পানি উঠছে না। প্রখর রোদে ছায়ার খোঁজে বেরিয়ে মারা যাচ্ছে বকের ছানা। সোমবার অন্তত ১০টি পাখির মরদেহ পাওয়া গেছে।গত তিন দিন থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের চত্বরে পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রের পাশে এমন ঘটনা ঘটছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মচারীরা পানি খাইয়ে বক পাখির বাচ্চাদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। বন বিভাগের লোকজনও পড়ে যাওয়া পাখিগুলোকে গাছে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মচারীরা বকের ছানা পেলে এদের পানি খাওয়ান।স্থানীয়রা জানান, এই এলাকাটিতে দীর্ঘদিন থেকে বক পাখিদের আবাস গড়ে উঠেছে। এখানে পাখিরা বাসা বেঁধে ডিম দেয়। বাচ্চা ফুটলে ও প্রাপ্তবয়স্ক হলে আবার উড়ে চলে যায়। আবার ডিম দেওয়ার সময় ফিরে আসে। বর্তমানে হাসপাতাল চত্বরের গাছে গাছে বক পাখির বাসা রয়েছে। প্রতিটি বাসায় আছে বাচ্চা। সম্প্রতি বাচ্চাগুলো উড়তে শিখেছে। এখন রাজশাহীতে চলছে টানা তাপপ্রবাহ। সদ্য উড়তে শেখা বাচ্চাগুলো এই তাপ সহ্য করতে না পেরে বাসা থেকে উড়ে ছায়াযুক্ত জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। এ সময় পিপাসায় কাতর অনেক বাচ্চা নিচে পড়ে মারা যাচ্ছে। একটু পানি খাইয়ে দিলেই এরা আবার উড়ে যাচ্ছে।রাজশাহী বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, গাছ থেকে পড়ে যাওয়া পাখিরা উড়তে না পারলে উদ্ধার করে রেসকিউ সেন্টারে নিয়ে আসা হচ্ছে। এরপর কর্মকর্তারা তিন-চারটি পাখিকে সেবা দিয়ে সুস্থ করে আবার উড়িয়ে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রখর তাপের কারণে সদ্য উড়তে শেখা বাচ্চারা নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বাসা ছেড়ে বেরিয়ে আসছে। পরে আর ফিরতে পারছে না। তখন অসুস্থ হয়ে মাটিতে পড়ছে।রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে এটিই এবারের মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। আগের দিন রবিবার তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি, শনিবার ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও শুক্রবার ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।গত ৩০ মার্চ রাজশাহীতে মাত্র এক মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। ৩১ মার্চ থেকে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। সেদিন থেকে কোনও বৃষ্টি হয়নি। দিন দিন তাপমাত্রা বেড়েই চলছে।

 

Related Articles

Back to top button