আন্তর্জাতিক

ইরানের হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীতে ছুটি বাতিল

ইরানের হামলার আশঙ্কায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীতে ছুটি বাতিল করেছে ইসরাইল। মঙ্গলবার সিরিয়ায় তিন জেনারেলকে হত্যার প্রতিবাদে ইরানের হুমকির ফলে এই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেজন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে দেশটি। বাতিল করেছে সামরিক বাহিনীর সকল কমব্যাট ইউনিটের ছুটি। বৃহস্পতিবার তাদের ছুটি বাতিল করা হয়।

ইসরাইলের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, উদ্ভূত পরিস্থিতির বিবেচনায় সামরিক বাহিনীর সকল কমব্যাট ইউনিটের ছুটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে গাজা যুদ্ধের উত্তেজনা পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন, দামেস্কে ইরানি দূতাবাসের কম্পাউন্ডে দুই জেনারেলসহ আইআরজিসি সদস্যদের হত্যার জন্য ইসরাইলকে শাস্তি দেয়া হবে।

দামেস্কে কনস্যুলেট ভবনে হামলা চালিয়ে ইরানি জেনারেলদের হত্যার দায় স্বীকার করেনি ইসরাইল। তবে কারোরই সন্দেহ বাকি নেই যে এটি ইসরাইলেরেই কাজ। সেজন্যই ইরান ওই হামলার হুমকি দেয়।

ইসরাইল ইরানের এই হুমকিকে বেশ গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে। তারা ম্যান এয়ার ডিফেন্স অ্যারেতে রিজার্স্টদের ডেকেছে। তারা আশঙ্কা করছে যে হুমকিটা প্রাথমিকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন নিক্ষেপের মধ্য দিয়েই প্রতিফলিত হতে পারে।

এছাড়া দখলদার দেশটি বিভিন্ন দেশে অবস্থিত তাদের দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোর নিরাপত্তাও জোরদার করেছে।

এদিকে, সোমবার দামেস্কে ইরানি দূতাবাসের পাশে অবস্থিত কনস্যুলার ভবনে হামলায় ইসলামিক রেভ্যুলুশনারি গার্ড কোরের সিরিয়াস্থ সবচেয়ে সিনিয়র কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজা জাহেদি, তার ডেপুটি এবং অন্য পাঁচ আইআরসিজি কর্মকর্তা নিহত হন। ইরান ও সিরিয়া এই হামলার জন্য ইসরাইলকে দায়ী করে প্রতিশোধ গ্রহণের সংকল্প ব্যক্ত করেছে।

ইসরাইলের চ্যানেল ১২-এর এক খবরে বলা হয়, প্রতিশোধ নিতে হিজবুল্লাহ বা অন্য কোনো গ্রুপকে না দিয়ে ইরান সরাসরি ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে।

ইসরাইলে ইরান সরাসরি হামলা চালানোর ব্যাপারে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সাবেক সামরিক গোয়েন্দাপ্রধান অ্যামোস ইয়ালদিন চ্যানেলটিকে বলেন, ইসরাইলে যদি ইরান সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, তবে বিষ্ময়ের কিছু থাকবে না। তিনি গত জানুয়ারিতে পাকিস্তানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা উল্লেখ করেন।

হিব্রু ভাষার মিডিয়ার খবরে বলা হয়, হুমকি মূল্যায়নের পর বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, সৈন্যদের তলব করা হয়েছে।

সোমবারের ওই হামলার পর লেবানন থেকে হিজবুল্লাহ বেশ কয়েক দফা ইসরাইলে রকেট নিক্ষেপ করেছে।

ঘটনাবলীর সাথে পরিচিত একজন পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সর্বাত্মক যুদ্ধ না করেই কিভাবে জবাব দেয়া যায়, তা নিয়ে ভাবছে ইরান। তারা এমন কিছু করতে চায়, যাতে করে জবাবও দেয়া যায়, আবার উত্তেজনাও না বাড়ে।

মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ইলিয়ট আবরাসমও মনে করেন, ইসরাইলের সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধ চায় না ইরান। তবে তারা ইসরাইলি স্বার্থে আঘাত হানবে।

আল জাজিরা ও অন্যান্য

Related Articles

Back to top button