আন্তর্জাতিক

ইসরাইলে ইরানি হামলা প্রতিরোধে অংশগ্রহণ, যা বলল সৌদি আরব

গত শনিবার ইসরাইলের ওপর ইরানি হামলা প্রতিরোধে সৌদি আরবও অংশ নিয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠেছে। তবে সংশ্লিষ্ট সৌদি সূত্র তা অস্বীকার করেছে বলে আল আরাবিয়া জানিয়েছে।

শনিবার ইরান থেকে তিন শতাধিক ড্রোন, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। এগুলোর বেশিভাগই ইসরাইলে প্রবেশ করার আগেই ভূপাতিত করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডান এসব প্রজেক্টাইলের বেশিভাগ আকাশেই ধ্বংস করে দেয়।

এদিকে ইসরাইলের একটি ওয়েসবাইট একটি সৌদি সরকারি ওয়েবসাইটের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায় যে ইরানি হামলা প্রতিরোধে সৌদি আরবও প্রতিরক্ষা জোটে অংশ নিয়েছিল।

এ প্রেক্ষাপটে সূত্রটি আল আরাবিয়াকে জানায়, ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলা প্রতিরোধে সৌদি আরবের অংশগ্রহণ নিয়ে কোনো বক্তব্য সৌদি আরবের কোনো সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়নি।

গত ১ এপ্রিল দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে ইসরাইলি হামলায় দুই শীর্ষ কমান্ডারসহ সাতজন নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ইরান ওই হামলা চালায়।

কেন ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবেই ইসরাইল
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলেছেন, ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে ইসরাইল কোনো এক সময় প্রতিশোধ নেবে এটা প্রায় নিশ্চিত। তবে প্রশ্ন হচ্ছে তা কিভাবে এবং কখন।

গাজা যুদ্ধ নিয়ে এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে অশান্তি বিরাজ করায় বিশ্ব নেতারা সংশ্লিষ্ট সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ইসরাইলের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে ইরানের হামলার সামরিক প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

তবে বেশ কিছু নিরাপত্তা বিশ্লেষক বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেছেন, ইসরাইল শিগগিরই বা পরে ইরানের এমন হামলার জবাব দেবে এ ব্যাপারে তাদের কোনো সন্দেহ নেই। এক্ষেত্রে তারা ইসরাইল এবং জোটের জন্য বিশাল ঝুঁকির এবং বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে এর প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন।

কেন ইসরাইল প্রতিশোধ নেবে?
ইসরাইল ও ইরানের ইসলামিক প্রজাতন্ত্র হলো চির শত্রু দেশ। যারা বছরের পর বছর ধরে গুপ্তহত্যা, সশস্ত্র হামলা এবং নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। উভয় দেশকে প্রায়শই মিত্র ও প্রক্সি বাহিনীর মাধ্যমে যুদ্ধে জড়াতে দেখা যায়।

শনিবার রাতে ইরান প্রথমবারের মতো ইসরাইলের ওপর সরাসরি হামলা চালায়। এসব হামলায় তারা শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে।

নিরাপত্তা পরামর্শদাতা স্টিফেন অড্র্যান্ড বলেছেন, যদিও ইসরাইল এবং তাদের মিত্ররা এসব হামলার অধিকাংশ ঠেকিয়ে দিয়েছে। ইরানের এমন হামলা দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন করে চরম অবনতি ঘটে।

এদিকে ইরান বলেছে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কোতে তেহরানের কনস্যুলেট ভবনে ১ এপ্রিল চালানো ভয়াবহ বিমান হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে তারা এসব ড্রোন ও বিমান হামলা চালায়। ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলার ঘটনায় ইসরাইলকে দায়ী করা হয়েছিল।

ওই হামলায় দুই সিনিয়র জেনারেলসহ ইরানের সাতজন রেভল্যুশনারি গার্ড নিহত হয় এবং সেখানে হামলার পরপরই ইরান এর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দেয়।

অড্র্যান্ড বলেছেন, ‘ইসরাইলের ভূখণ্ড অন্য রাষ্ট্র দ্বারা হামলার শিকার হলে, এক্ষেত্রে ঐতিহ্যগতভাবে ইসরাইলের একটি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে।’

ইসরাইলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান তামির হায়মান যুক্তি দিয়ে বলেন, ইসরাইল তাদের সুবিধামতো সময়ে পাল্টা আঘাত করবে এমনটা প্রায় নিশ্চিত।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেয়া তার ভবিষ্যদ্বাণীতে বলেন, ‘ইরানের মাটিতে হামলা চালিয়ে ইসরাইল তাদের জবাব দেবে।’

সূত্র : আরব নিউজ, এএফপি

Related Articles

Back to top button