উন্নয়ন অগ্রগতিদেশজুড়ে

বানভাসী ছন্নছাড়া মানুষগুলো নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছ

নীলফামারী’র সর্বগ্রাসী বুড়িতিস্তা পাড়ের মানুষ পাউবো’র কর্মযজ্ঞে খুশি

আজিুজুল বুলু, নীলফামারী ॥ সর্বগ্রাসী বুড়িতিস্তা নদী শাসনে টেকসই ব্যাংকেট বাঁধ
নির্মাণে নদী-তীরবর্তী যুগ-যুগ ধরে লাখো মানুষের কাঁন্না আর যোগাযোগ ব্যবস্থা’র
দুর্ভোগ লাঘবে পাউবো’র কর্মযজ্ঞে খুশি বুড়িতিস্তা পাড়ের মানুষজন।এ বাঁধটি
নির্মানের ফলে রাক্ষুসী বুড়িতিস্তা নদী তীরবর্তী মানুষজনের আর্থসামাজিক উন্নয়নে দ্রুত
পাল্টাবে দৃশ্যপট এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন:নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী
প্রকৌশলী অতিকুর রহমান।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে:অববাহিকা বুড়িতিস্তার উৎপত্তিস্থল ভারতে পশ্চিম বঙ্গের
জলপাইগুড়ি জেলা অতিক্রম করে বাংলাদেশ সীমান্তের নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই
ইউনিয়নে প্রবেশ করে।৬৯ কিলোমিটার এই ¯স্রোতশ্বীনি বুড়িতিস্তা প্রবাহিত হয়ে জলঢাকা উপজেলার
শৌলমারী ইউনিয়নের বানবাড়া নামকস্থনে এসে আলোচিত তিস্তা নদী’র মোহনায় মিলিত
হয়েছে। হাজার বছর ধরে বুড়িতিস্তা অববাহিকা বর্ষা মওসুমে রাক্ষুসী রুপ ধারণ করে নদীর তীরবর্তী
দু’পাড়ের মানুষের বসতভিটা-জায়গাজমি-সহায়সম্বল গ্রাস করে লাখো মানুষকে ভিক্ষারী বানিয়ে দেয়
এক পলকে।এসব মানুষ সর্বহারা হয়ে জীবন-জীবিকার সংগ্রামে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জীবিকা
নিবাহ করে আসছে যুগ-যুগ ধরে।এসব নিঃস্ব মানুষ গুলোর কথা চিন্তা করে তাদের ভাগ্য উন্নয়নে
জলঢাকা উপজেলার গুলমুন্ডা ব্রীজ হতে শৌলমারী ইউনিয়নের বানপাড়া পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার বুড়িতিস্তা
নদী দু’কুল শাসন করতে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নের বরাদ্দ চায় পানি সম্পদ
মন্ত্রনালয়ের কাছে। বুড়িতিস্তা নদী শাসনে টেকসই বাঁধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ১১
কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় পানি সম্পদ মন্ত্রনারয়।এ বরাদ্দ পেয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধটি
নির্মানে ২০২১ সালে দরপত্র আহবান করে সর্বনিম্ন দরদাতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান
করে।ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পেয়ে জলঢাকা উপজেলার গুলমুন্ডা ব্রীজ থেকে শৌলমারী বানপাড়া
তিস্তার মোহনা পর্যন্ত দু’পাড়ের প্রায় ২৬ কিলোমিটার নদী শাসন বাঁধ নির্মাণ কাজ ৯০শতাংশ শেষ
করেছে।অবশিষ্ঠ ১০ শতাংশ কাজ শুস্ক মওসুমের আগেই শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নীলফামারী’র
জলঢাকা পওর বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জুলফিকার রহমান।বুড়িতিস্তা পাড়ের মানুষের কথা যুগ-
যুগ ধরে প্রতিবছর বর্ষা-মওসুমে বুড়িতিস্তা সর্বগ্রাসী রুপ ধারণ করে দু’পাড়ের নদী ভাঙ্গনের
শিকার শত-শত পবিরার তারা নিঃস্ব হয়ে পথে-পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।এসব নদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষ গুলোর
অনেকের গোলা-ভরা-ধান, গোয়াল-ভরা-গরু, –পুকুর-ভরা-মাছ, ছিলো তাদের।এখন তারা সর্বহারা।এই মানুষ
গুলো জীবন-জীবিকার সন্ধানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।রাক্ষুসী
বুড়িতিস্তা নদী শাসনে ২০ফিট টেকসই বাঁধ নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মযজ্ঞের খবরে
বানভাসী নাদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষ গুলো নাভির টানে নিজ এলাকায় ফিরতে শুরু করেছে।এদের মধ্যে ফিরে
আসা সিলেট থাকা রোস্তম আলী (৫৫) তার ৫ সদস্যে’র পরিবার নিয়ে ফিরেছেন তার নিজ এলাকা
ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের ভবনচুর গ্রামে।হাচার আলী (৬৫) তিনি দীর্ঘ দুই যুগ ধরে চট্রোগ্রামে
ছিলেন:তার ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে নিজ এলাকা শৌলমারী ইউনিয়নের বানপাড়া গ্রামে
এসছেন।নবকুমার (৭০) তিনি দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে ঢাকার গাজিপুরের মনিহর মহল্লায় থাকতেন তিনি তার
৪ সদস্যের পরিবার নিয়ে নিজ এলাকা গুলমুন্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পাড়া গ্রামেএসছেন।এসব ফিরে
আসা বানভাসী মানুষ গুলোর কাছে ফিরে আসার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন: বুড়িতিস্তার নদরোধে যে বাঁধ নির্মাণ করেছে তাদের আর নদী ভাঙ্গনের শিকার হতে হবে না। আর যোগাযোগের
দুর্ভোগ লাঘবে এ বাঁধ ভুমিকা রাখবে।সবমিলিয়ে আমরা নিজ এলাকায় নিজ ভুমিতে জীবন-জীবিকার
সংগ্রাম করে জীবিকা নির্বাহ করতে চাই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button